বাংলাদেশে আজকের সোনার দাম ২০২৫
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বাজারে সোনার দাম নিম্নরূপ নির্ধারণ করা হয়েছে: স্বর্ণের দামের এই ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায়, ক্রেতাদের স্বর্ণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকা প্রয়োজন।
২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ১,৪৪,৮৯০ টাকা প্রতি ভরিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ২,৯২৮ টাকা ।
২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ১,৩৮,৩০০ টাকা প্রতি ভরিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ২,৭৯৯ টাকা ।
১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ১,১৮,৫৪১ টাকা প্রতি ভরিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ২,৪০৩ টাকা ।
- ⇒২২ ক্যারেট ১,৪৭,৮১৮ টাকা প্রতি ভরি।
- ⇒২১ ক্যারেট ১,৪১,০৯৯ টাকা প্রতি ভরি।
- ⇒১৮ ক্যারেট ১,২০,৯৪৪ টাকা প্রতি ভরি।
উল্লেখ্য, ১ ভরি সোনা সমান ১১.৬৬৪ গ্রাম। সোনার এই মূল্য ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে।
সোনা, তার উজ্জ্বলতা ও স্থায়িত্বের জন্য যুগ যুগ ধরে মূল্যবান ধাতু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তবে সোনার বিশুদ্ধতা এবং মূল্য নির্ধারণে ক্যারেট একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। বাংলাদেশে সাধারণত ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট এবং ২২ ক্যারেট সোনা বাজারে পাওয়া যায়।
ক্যারেট কী?
ক্যারেট (Karat) হলো সোনার বিশুদ্ধতার পরিমাপক। ২৪ ক্যারেট সোনা সম্পূর্ণ খাঁটি বা ১০০% বিশুদ্ধ সোনা বোঝায়। তবে খাঁটি সোনা নরম হওয়ায়, গহনা তৈরিতে এটি ব্যবহার করা কঠিন। তাই সোনার সাথে রূপা, তামা বা অন্যান্য ধাতু মিশিয়ে ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট বা ১৮ ক্যারেট সোনা তৈরি করা হয়, যা গহনা তৈরির জন্য উপযুক্ত।
ক্যারেট অনুযায়ী সোনার বিশুদ্ধতা:
- ⇒২২ ক্যারেট: প্রায় ৯১.৬৭% বিশুদ্ধ সোনা।
- ⇒২১ ক্যারেট: প্রায় ৮৭.৫% বিশুদ্ধ সোনা।
- ⇒১৮ ক্যারেট: প্রায় ৭৫% বিশুদ্ধ সোনা।
- ⇒২০২৫ সালে সোনার দাম
সোনার দাম আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভর করে নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দেশের বাজারে সোনার মূল্য নির্ধারণ করে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে সোনার দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে।
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে সোনার দাম ছিল:
- ২২ ক্যারেট: ১,৪৪,৮৯০ টাকা প্রতি ভরি।
- ২১ ক্যারেট: ১,৩৮,৩০০ টাকা প্রতি ভরি।
- ১৮ ক্যারেট: ১,১৮,৫৪১ টাকা প্রতি ভরি।
এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে সোনার দামে পুনরায় বৃদ্ধি পায় :
- ২২ ক্যারেট: ১,৪৭,৮১৮ টাকা প্রতি ভরি।
- ২১ ক্যারেট: ১,৪১,০৯৯ টাকা প্রতি ভরি।
- ১৮ ক্যারেট: ১,২০,৯৪৪ টাকা প্রতি ভরি।
উল্লেখ্য, সোনার এই মূল্য শুধুমাত্র ধাতুর জন্য প্রযোজ্য। গহনা ক্রয়ের সময় মজুরি ও ৫% ভ্যাট আলাদাভাবে প্রযোজ্য হয়। তাই গহনার চূড়ান্ত মূল্য নির্ধারণের সময় এই অতিরিক্ত খরচ বিবেচনা করতে হবে।
৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট |
সোনার দামের ওঠানামার কারণ ?
সোনার দামে ওঠানামা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন:
আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবর্তন: বিশ্ববাজারে সোনার চাহিদা ও জোগানের উপর ভিত্তি করে দাম পরিবর্তিত হয়।
মুদ্রার বিনিময় হার: ডলার ও টাকার বিনিময় হারের পরিবর্তন সোনার দামে প্রভাব ফেলে।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সোনার দামে প্রভাবিত করে।
সোনার দামের সর্বশেষ তথ্যের জন্য বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বা বিশ্বস্ত জুয়েলারি দোকানের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
সোনা কেনার আগে ক্রেতাদের করণীয়
সোনা দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগ, অলংকার ও সম্পদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে ২০২৫ সালে সোনা কেনার আগে ক্রেতাদের কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত, যাতে তারা সঠিক মূল্যে খাঁটি সোনা কিনতে পারেন। নিচে সোনা কেনার আগে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হলো:
১. বাজার মূল্য যাচাই করুন
সোনার দাম প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়, তাই কেনার আগে সর্বশেষ বাজার মূল্য যাচাই করা জরুরি। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের হালনাগাদ তথ্য পেতে অনলাইন ও সংবাদমাধ্যম অনুসরণ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
২. হলমার্ক যাচাই করুন
বাংলাদেশে খাঁটি সোনা চিহ্নিত করার জন্য বিএসটিআই (BSTI) অনুমোদিত হলমার্ক বাধ্যতামূলক। তাই কেনার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে সোনায় হলমার্ক সনদ রয়েছে কি না।
৩. খাঁটি সোনার ক্যারেট পরীক্ষা
সোনার বিশুদ্ধতা সাধারণত ক্যারেট অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। ২৪ ক্যারেট বিশুদ্ধ সোনা হলেও অলংকার তৈরিতে সাধারণত ২২, ১৮ ও ১৪ ক্যারেটের সোনা ব্যবহৃত হয়। কেনার আগে ক্যারেট পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. বিক্রেতার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই
বিশ্বাসযোগ্য ও অনুমোদিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোনা কেনা উচিত। নামকরা দোকান ও ব্র্যান্ডেড জুয়েলারি শপ থেকে কেনার মাধ্যমে প্রতারণার ঝুঁকি কমানো যায়।
৫. বিল ও রশিদ সংরক্ষণ
সোনা কেনার সময় অবশ্যই লিখিত রশিদ সংগ্রহ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এটি ফেরত বা বিনিময় করতে সমস্যা না হয়। রশিদে সোনার ক্যারেট, ওজন, দাম ও হলমার্ক সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য থাকা উচিত।
৬. নকল সোনা চেনার উপায়
সোনার বিশুদ্ধতা নির্ণয়ের জন্য কিছু সাধারণ পরীক্ষা রয়েছে। যেমন:
- চুম্বক পরীক্ষা: খাঁটি সোনা চুম্বকের প্রতি সংবেদনশীল নয়।
- সিরামিক টাইল পরীক্ষা: সোনা যদি অমসৃণ টাইলের উপর ঘষলে কালো দাগ পড়ে, তবে সেটি খাঁটি নয়।
- অ্যাসিড টেস্ট: এটি নির্ভরযোগ্য জুয়েলারি দোকানে করা হয়, যা খাঁটি সোনা চিহ্নিত করতে সহায়ক।
৭. কেনার উদ্দেশ্য বিবেচনা
সোনা কেনার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করাও জরুরি। যদি বিনিয়োগের জন্য কেনা হয়, তবে ২৪ ক্যারেটের বার বা কয়েন কেনা ভালো। আর যদি অলংকারের জন্য হয়, তবে নকশার ও ক্যারেটের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
৮. ফেরত ও বিনিময় নীতিমালা জানুন
অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট শর্তে সোনা ফেরত বা বিনিময় করে থাকেন। তাই কেনার আগে সেই নীতিমালা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা দরকার।
৯. অনলাইন কেনাকাটা করলে সতর্কতা
বর্তমানে অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও সোনা বিক্রি হয়। তবে অনলাইন থেকে কেনার আগে অবশ্যই বিক্রেতার পরিচিতি, গ্রাহক রিভিউ এবং হলমার্কের নিশ্চয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
১০. নিরাপদ সংরক্ষণ
সোনা কেনার পর এটি নিরাপদে সংরক্ষণ করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাড়িতে লকার বা ব্যাংকের নিরাপদ ভল্ট ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে চুরি বা ক্ষতির আশঙ্কা কমে।
সোনা কেনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ ও আবেগের বিষয়। সঠিক তথ্য ও সচেতনতার মাধ্যমে সোনা কেনার সময় প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে বাঁচা সম্ভব। তাই ২০২৫ সালে সোনা কেনার আগে উপরের বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত।
Post Comment