×

২০২৫ সালে মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত?

২০২৫ সালে মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত?

২০২৫ সালে মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত?

২০২৫ সালে মালয়েশিয়ায় ভ্রমণ বা কাজের উদ্দেশ্যে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা ফি এবং সংশ্লিষ্ট খরচ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিসার ধরন, প্রক্রিয়া এবং খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে উপস্থাপন করা হলো:

কর্মসংস্থান (ওয়ার্ক পারমিট) ভিসা ২০২৫

বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য সরকারিভাবে একজন কর্মীর অভ্যন্তরীণ খরচ ৭৮,৯৯০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। এই খরচের মধ্যে পাসপোর্ট ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিবন্ধন ফি, কল্যাণ ফি, বিমা, স্মার্টকার্ড ফি এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ অন্তর্ভুক্ত। তবে, নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠান বিমান ভাড়া এবং ভিসা প্রক্রিয়ার অন্যান্য খরচ বহন করবে।

বর্তমান বৈশ্বিক কর্মসংস্থানের বাজারে বিদেশে কাজের সুযোগ নেওয়া অনেক বাংলাদেশির স্বপ্ন। কর্মসংস্থান বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হল বিদেশে কাজের জন্য অনুমোদিত ভিসার একটি প্রকার, যা প্রবাসী কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করার সুযোগ দেয়। ২০২৫ সালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার নীতিমালা, খরচ এবং আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলো।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কী?

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হল এমন একটি ভিসা, যা বিদেশি নাগরিকদের নির্দিষ্ট দেশ বা নিয়োগকর্তার অধীনে বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি দেয়। এই ভিসা সাধারণত নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ইস্যু করা হয় এবং নবায়নযোগ্য হতে পারে।

২০২৫ সালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার শর্তাবলী

একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে সাধারণত নিম্নলিখিত শর্তাবলী পূরণ করতে হয়:

  1. চাকরির প্রস্তাব (Job Offer):
    • আবেদনকারীকে অবশ্যই বিদেশি নিয়োগকর্তার কাছ থেকে একটি বৈধ চাকরির অফার পেতে হবে।
  2. কর্মসংস্থান চুক্তি (Employment Contract):

    • চাকরির ধরন, বেতন, কাজের শর্তাবলী এবং অন্যান্য সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে।
  3. শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা:

    • নির্দিষ্ট চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  4. মেডিকেল পরীক্ষা:

    • স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে আবেদনকারী শারীরিকভাবে কাজের উপযোগী।
  5. নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক শর্ত:

    • কিছু দেশে আবেদনকারীর নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যাংক ব্যালেন্স থাকতে হয়, যা তাদের ভিসা প্রক্রিয়ার সময় দেখাতে হয়।

বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা: সুবিধা, ঝুঁকি ও সতর্কতা ২০২৫

বৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশে যাওয়ার অন্যতম একটি উপায় হলো বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করা। তবে এই পদ্ধতিতে যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনি কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। তাই সচেতনভাবে সঠিক এজেন্সি নির্বাচন করা জরুরি।

বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা কী?

বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিদেশে চাকরি, পড়াশোনা বা স্থায়ী বসবাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রসেসিং করে থাকে। এসব এজেন্সি সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়োগকর্তা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে এবং আগ্রহী প্রার্থীদের উপযুক্ত ভিসা পেতে সহায়তা করে।

বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার সুবিধা

সহজ প্রক্রিয়া:
নিজে ভিসার জন্য আবেদন করা অনেক সময় জটিল হতে পারে। এজেন্সিগুলো অভিজ্ঞতার কারণে সহজে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারে।

সঠিক কাগজপত্রের সহায়তা:
এজেন্সিগুলো আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করতে সহায়তা করে, যা ভুলের সম্ভাবনা কমায়।

চাকরির নিশ্চয়তা:
বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে, বিশ্বস্ত এজেন্সিগুলো বৈধ চাকরির নিশ্চয়তা দিতে পারে।

পর্যটন ও শিক্ষাগত সহায়তা:
পর্যটন, স্টুডেন্ট বা বিজনেস ভিসার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করতে হয়, যেখানে এজেন্সির অভিজ্ঞতা কার্যকর হতে পারে।

বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার ঝুঁকি

প্রতারণার শিকার হওয়ার আশঙ্কা:
অনেক অসাধু এজেন্সি ভুয়া চাকরির অফার দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।

অতিরিক্ত ফি নেওয়া:
অনেক এজেন্সি সরকার নির্ধারিত ফি-এর চেয়ে বেশি টাকা আদায় করে, যা প্রতারণার পর্যায়ে পড়ে।

নকল বা ভুয়া কাগজপত্র:
কিছু এজেন্সি ভুয়া নথিপত্র ব্যবহার করে আবেদন জমা দেয়, যা আবেদনকারীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং ভিসা বাতিলের কারণ হতে পারে।

অবৈধ অভিবাসন:
কিছু এজেন্সি অবৈধ পথে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে, যা পরবর্তীতে দেশে ফেরত পাঠানোর কারণ হতে পারে।

তাই আপনাদের সাবধানতা ওবলম্বন করতে হবে । তবে মনে রাখবেন বেসরকারি ভাবে বিদেশে না যাওয়া ভালো কারন হল আপনাকে ওবোইদো ভাবে বিদেশে নেয়ার চেষ্টা করবে গেলেও আপনাকে নানা ধরনের সমস্যায় পরতে হতে পারে তাই বিদেশ যাওয়ার আগে আপনাকে ভাবতে হবে আপনি কি করবেন ধন্যবাদ।

ভালো ও বিশ্বস্ত এজেন্সি চেনার উপায়

সরকারি নিবন্ধিত এজেন্সি নির্বাচন করুন:
বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দেখে যাচাই করুন।

অনলাইন রিভিউ ও রেফারেন্স দেখুন:
অন্যদের অভিজ্ঞতা যাচাই করতে অনলাইনে রিভিউ দেখুন এবং পরিচিতদের পরামর্শ নিন।

চুক্তিপত্রের শর্ত পড়ে নিন:
কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা প্রসেস করার আগে তাদের চুক্তির শর্ত ভালোভাবে পড়ুন।

কোনো সংস্থার প্রতি সন্দেহ হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানান:
যদি কোনো এজেন্সি প্রতারণা করে, তবে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (BMET) অথবা বাংলাদেশ অভিবাসন ও পাসপোর্ট দপ্তরে অভিযোগ জানান।

ট্যুরিস্ট ভিসা:

পর্যটন উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন ফি সাধারণত ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকার মধ্যে হয়। তবে, বিমান ভাড়া, হোটেল বুকিং এবং অন্যান্য খরচসহ মোট ব্যয় প্রায় ১ লাখ থেকে ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

বেতন কাঠামো:

মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন সেক্টরে বেতন কাঠামো ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ:

রেস্টুরেন্ট কর্মী: মাসিক বেতন প্রায় ১,৮০০ থেকে ১,৯০০ রিঙ্গিত, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার সমান।

নির্মাণ শ্রমিক: মাসিক বেতন প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা, তবে অভিজ্ঞ শ্রমিকদের বেতন ৬০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

মুদ্রা বিনিময় হার:

বর্তমানে (২০২৫ সালে) ১ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত সমান প্রায় ২৮ বাংলাদেশি টাকা। মুদ্রার বিনিময় হার সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই ভ্রমণের আগে সর্বশেষ বিনিময় হার যাচাই করা পরামর্শ দেওয়া হয়।

ভিসা প্রক্রিয়া এবং খরচ সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্যের জন্য সরকারিভাবে অনুমোদিত এজেন্সি বা মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। অবিশ্বস্ত সূত্র বা দালালের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সঠিক তথ্য ও প্রস্তুতির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় আপনার ভ্রমণ বা কর্মজীবন সফল ও নিরাপদ হবে।

Post Comment